আমরাও মানুষ। জিবনে একবার হলেও এই উপন্যাস টা পড়তেই হবে

              

আমরাও মানুষ

 

 

 

 

                                         আমরাও মানুষ

   
লেখা                           :    [ দার্শনিক কবি ]

 

 

ছোট্ট একটা মাটির ঘর। 
ছাদের কোণে ছ্যাঁদা, দরজার কপাটে ধুলো জমে।
তবুও সেই ঘরের মাঝেই এক মেয়ে — নাম রাবেয়া — সকাল থেকে সন্ধ্যা, জীবনকে জাপটে ধরে বেঁচে আছে।

রাবেয়ার বাবা ছিল একজন ভ্যানচালক। মা কাপড় সেলাই করতেন।
অভাব ছিল, কিন্তু আত্মসম্মান ছিল আরও বড়।
রাবেয়া সেই ঘরে দাঁড়িয়েই স্বপ্ন দেখতে শিখেছিল।


 

স্কুলে যেতো পায়ে হেঁটে — কখনো খালি পায়ে।
ক্লাসে শিক্ষক তাকে আদর করতেন, কিন্তু শহরের ধনী মেয়েরা তাকে "মাটির মেয়ে" বলত।
তবুও সে চুপ থাকত না।

> সে বলত,
"আমরা গরিব হতে পারি, কিন্তু আমরা মাটি নই —
মাটির নিচেই সবচেয়ে দামি হীরা লুকিয়ে থাকে।"



 

মাটির ঘরে জন্মেছি বলে কি,
স্বপ্নগুলো মাটি হবে?

আমিও তো মানুষ, মায়ের কোলের আলো,
জন্ম নিলেও গরিব, মরবো না মরে যাওয়া চলো।

তোমাদের ইটের শহর, নরম বিছানা, আলো ঝলমল ঘর —
আমারও ছিল ইচ্ছা, একটা বইয়ের পাতায় নাম জড়ানো স্বর।


 

রাতে মা সেলাই মেশিন চালাতেন। চোখে ঘুম থাকত না।
রাবেয়া পাশে বসে হোমওয়ার্ক করত, আর মাঝে মাঝে কাঁদত চুপিচুপি।

এক রাতে মা বলেছিল,
“মেয়ে, লেখাপড়া কর। এই দুনিয়ায় গরিবের মুখ দেখে কেউ কিছু দেয় না। নিজের আলো নিজেই জ্বালাতে হয়।”

 

ও মা, তোমার কুঁচকে যাওয়া হাত দুটো
যখন আমার মাথায় রাখো —
আমি সব দুঃখ ভুলে যাই।

তোমার চোখে নেই সোনার স্বপ্ন,
তবুও তুমি আমার পৃথিবী।

তোমার জন্য আমি লিখি আজ,
তুমি কাঁদো না মা,
একদিন আমি তোমার গর্ব হবো।


 

এইচএসসি পাশ করার পর কলেজে ভর্তি হয়েছিল রাবেয়া।
ক্লাস শেষে শহরের মোড়ে একটা চায়ের দোকানে কাজ করত।
এক কাপ চা বানিয়ে দিতে দিতে চোখ চলে যেত বইয়ের পাতায়।

লোকেরা হাসত। বলত —
"বই নিয়ে কি চায়ের দোকান চালানো যায়?"
সে বলত —
"আমার বই-ই একদিন তোমার টেবিলের চায়ের কাপ সরাবে।"


 

চায়ের কাপে দেখি আমি,
জীবনের গল্প ভাসে।

হাতে কলম না থাকলেও,
চায়ের স্টলে স্বপ্ন হাসে।

চায়ের কাপের ধোঁয়ার মাঝে,
একদিন লেখা হবে আমার নাম —
বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে, মাথা উঁচু করে!


 
একদিন কলেজে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় রাবেয়া।
বিষয় ছিল — “গরিবরা মানুষ নয়, তারা শুধুই সংখ্যা।”

সবাই যখন মুখে মুখে তর্ক করছিল,
রাবেয়া উঠে দাঁড়িয়ে বলল:

> “যে মা নিজের খাবার না খেয়ে মেয়েকে পড়ায়,
যে বাবা নিজের শরীর ভাঙে ছেলের স্কুল ফি দেওয়ার জন্য —
তাদের সংখ্যা নয়, হৃদয় লাগে বোঝার জন্য।”



পুরো হল নীরব হয়ে যায়।
প্রথম পুরস্কার রাবেয়ার —
কিন্তু তার চোখে জল, কারণ তার মা তখনও কাজ করছিল ভোরে উঠে।

 
আমার নাম নেই শহরের খাতায়,  
তবুও আমিও মানুষ।

গণনায় নেই, তালিকায় নেই,  
তবুও আমারও স্বপ্ন থাকে।

গরিব বলেই যদি মন হারায় —  
তবে মনুষ্যত্ব কোথায়?
আমার চোখের জলে প্রশ্ন রাখি,
আমরাও কি মানুষ না?

 

রাবেয়া ভর্তি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে — সমাজবিজ্ঞান বিভাগে।
সে তখনও শহরের ব্যস্ত রাস্তায় গার্মেন্টসের কাজ করত।
তার রোল নম্বর ছিল ১১২৪, কিন্তু ক্লাসে তার নাম হয়ে গিয়েছিল —
"প্রেরণা আপু"।

তার কথায় বাঁচতে শিখত অনেকে।
একদিন এক ধনী ছাত্রী এসে বলল —
"তোমাকে দেখে নিজের সংকোচ কাটিয়ে উঠি।"

 
রোল নম্বর ১১২৪ — নামটা হয়তো কেউ মনে রাখবে না,  
কিন্তু চোখে চোখ রাখলে বোঝা যাবে — কতটা আগুন পুড়েছে।

হোস্টেলে জায়গা হয়নি, তবুও বই ছিল বালিশ,  
ক্লাসে কেউ প্রথম হলে কাঁদত আমি —  
কারণ আমি জানি, সাফল্যের দাম কী।

রোল নম্বর না, আমি একজন গল্প —  
যার নাম ‘আমরাও মানুষ’।

 

গ্র্যাজুয়েশন ডে তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে ধনী ছেলেটি মঞ্চে উঠে বলে —

> “আজ আমি একটি মেয়ের নাম বলবো, যার কাছে আমি মানুষ হতে শিখেছি।
সে আমার বন্ধু নয়, প্রেমিকা নয় — সে আমার বিবেকের আয়না।
সে হলো — রাবেয়া।”



মঞ্চজুড়ে হাততালি।
রাবেয়া দাঁড়িয়ে কাঁদে না, হাসে — কারণ সে জানে, আলো জ্বালাতে মোম লাগে না, লাগে সাহস।


 
আমার নাম রাবেয়া,
আমি ভাঙা ঘরের আলো।

আমার পেছনে কুকথা ছিল,
সামনে ছিল পাহাড়।

তবুও আমি উঠেছি,
একটা ছেঁড়া চুড়ির মতো ঝনঝনিয়ে বলি —
আমরাও মানুষ!

চুলে তেল নেই, পায়ে জুতা নেই,  
তবুও হৃদয়ে আছে ঈশ্বর — আর মানুষের ভালোবাসা।


  . উপসংহার: সম্মান যেখানে জাগে

রাবেয়ার জীবন কেবল তার একার নয় —
এটি এক প্রতীক হয়ে দাঁড়ায় হাজারো মেয়ের জন্য,
যারা এখনও একবেলা না খেয়ে স্কুলে যায়,
একজোড়া স্যান্ডেলের জন্য রাত জেগে কাজ করে।

আজ শহরের বড় বড় কর্পোরেট অফিস, ক্যাম্পাসের দেয়ালে, লোকের মুখে ঘুরে বেড়ায় একটাই কথা—

> “আমরাও মানুষ। আমরা কেউ ছিন্নমূল নই, আমরা ভবিষ্যতের মূল।”



 

আমাদের হাতে মোবাইল নেই,  
তবুও আমরা মা’কে ফোন করতে চাই।

আমাদের চুল খোলা থাকে ধুলায়,  
তবুও আমরা রঙিন ক্লিপের স্বপ্ন দেখি।

আমাদের কেউ ডাক্তার হতে দেয় না,  
তবুও আমরা জীবন বাঁচাতে চাই।

আমরা যারা রাস্তার পাশে হাঁটি,  
যারা তোমার বাসায় কাজ করি,  
আমরাও মানুষ —  
আমরাও শ্বাস নেই, স্বপ্ন দেখি, প্রেম করি।

আমরাও চোখের জলে ভাসি,  
তুমি শুধু একটু তাকাও…  
দেখবে, আয়নায় তুমি আমাকেই দেখতে পাচ্ছো।


  

🔚 শেষ নয়, শুরু

এই গল্প কেবল রাবেয়ার নয়।
এই গল্প তোমার, আমার, আমাদের চারপাশে থাকা হাজারো অসহায় মুখের প্রতিচ্ছবি।
তারা চায় না করুণা, চায় না অনুগ্রহ —
তারা চায় সম্মান।

গরিব-ধনীর ভেদাভেদ নয়,
মানুষ হিসেবে মানুষকে দেখতে শেখো —
তাহলেই সমাজ জাগবে।


 


 


 
                                🖤 বিশেষ অনুরোধ:



যদি এই গল্প পড়ার পর কারও চোখ ভিজে আসে —
তবে কেউ একজন নিজের আশেপাশে থাকা সেই “রাবেয়া”-কে একটু সম্মান দাও।
একটুখানি ভালোবাসা দিলেই সমাজ বদলে যাবে...

 

 

 

                              [দার্শনিক কবি ] 

 

                                         [ Premer Pata ]

    

# প্রেমের পাতা: ভালোবাসার গল্প, বিরহ ও হৃদয়ের কাব্য

## ১. সম্পর্কের শুরু – যখন চোখে চোখ পড়ে

প্রথম প্রেমের অনুভব যেমন হয় – অচেনা অথচ চেনা লাগা…

## ২. ভালোবাসা বাড়ে – কিন্তু সঙ্গে আসে দূরত্ব

সব সম্পর্কেই আসে একটা সময়, যখন মনের দূরত্ব শুরু হয়।

## ৩. ভুল বোঝাবুঝি ও বিষণ্ণতা

তুচ্ছ বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি, আবেগের ওঠানামা সম্পর্ককে দোলায়।

## ৪. প্রেম টিকে থাকুক – কিছু পরাম

 

 
📢 [কমেন্টে বলুন] – আপনার প্রেমের গল্প কেমন ছিল?

 

 

 


 

 

 

 

 

 

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছাদ থেকে ঝরে পড়া চিঠি – পর্ব ১: নীরবতার দিকে লেখা প্রথম চিঠি

প্রেমের পাতা: ভালোবাসা, বিরহ ও হৃদয়ের কাব্য (২০২৫ ব্লগ)" মন ভোলানো একটা গল্প